বেন স্টোকস ভেবেছিলেন, সব শেষ! সাহায্যের জন্য কাউকে যে ডাকবেন, সে উপায়ও ছিল না। কিন্তু ভাগ্য ভালো, অবশেষে সব ঠিক হয়েছে। জানে বেঁচেছেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার। ওষুধ গলায় আটকে শ্বাস বন্ধ হয়ে যে মারাই যেতে বসেছিলেন স্টোকস!
ইংল্যান্ড দল যখন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মর্যাদার অ্যাশেজের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তার মধ্যে হোটেলে নিজের কক্ষে এমন দুঃস্বপ্নের মতো মুহূর্তের সাক্ষী হওয়ার কথা ইংলিশ দৈনিক ডেইলি মেইলে নিজের লেখা কলামে জানিয়েছেন স্টোকস।
এর মধ্যে আজ আবার ডেইলি মেইলের অনলাইন সংস্করণে নতুন খবর এল, অ্যাশেজ উপলক্ষে ইংল্যান্ডের অনুশীলনে ব্রিসবেনে গতকাল রোববার স্টোকসের হাতে বল লেগেছে। শেষ পর্যন্ত গুরুতর কোনো চোট পাননি তিনি। তবে বল হাতে লাগার পর যে তীব্র ব্যথা ছিল, তাতে ইংলিশ অলরাউন্ডার ভেবেছিলেন, তাঁর হাত বুঝি ভেঙেই গেছে!
আঙুলে পাওয়া চোটের অস্ত্রোপচার আর মানসিক চাপ কমাতে ক্রিকেট থেকে বিরতির পর অ্যাশেজ দিয়েই ক্রিকেটে ফিরছেন স্টোকস।
এর মধ্যে ব্রিসবেনে গতকাল অনুশীলনের ঘটনাটার বর্ণনায় ৩০ বছর বয়সী অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘অনুশীলনে ফিরতে পেরে ভালো লাগছিল, কিন্তু এরপর এল ভয় পাওয়া মুহূর্তটা। আমাদের ব্যাটিং কোচ জোনাথন ট্রটের ছোড়া বল যখন আমার হাতের সামনের দিকে লাগে, ব্যথায় কাতরাচ্ছিলাম, হাত ওঠাতেই পারছিলাম না। আমি তো ভেবেছিলাম হাত বুঝি ভেঙেই গেছে। সৌভাগ্য, ড্রেসিংরুমে ফেরার পর ব্যথা আর এর প্রভাব কমে এসেছে। আমাদের ফিজিওরাও নিশ্চিত হতে পেরেছেন যে হাত ভাঙেনি।’
এ তো গেল হাতের ব্যথা, এর আগে তো একটু হলে পৈতৃক প্রাণটাই হারানোর শঙ্কায় পড়েছিলেন স্টোকস! গলায় ওষুধ আটকে শ্বাস বন্ধ হওয়ার সে ঘটনা কখন ঘটেছে, সেটা নির্দিষ্ট করে বলেননি স্টোকস। শুধু বলেছেন এক রোববারের কথা। তবে যেহেতু তিনি দলের সঙ্গে হোটেলের কক্ষে ছিলেন, ধরে নেওয়া যায়, সেটি এই অ্যাশেজের প্রস্তুতির সময়েই। ধারণা করা হচ্ছে, এ ঘটনাও গতকাল রোববারেই ঘটেছে।
দুঃস্বপ্নসম মুহূর্তটার বর্ণনা দিয়েছেন ডেইলি মেইলে লেখা নিজের কলামে, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত ওষুধটা বের হয়নি, তার আগপর্যন্ত আমি ভেবেছিলাম, এখানেই আমার শেষ। আমি নিজের কক্ষে একা ছিলাম। ওষুধটা গলায় আটকে গিয়েছিল, ওখানেই আস্তে আস্তে গলতে শুরু করল। নিশ্বাসই নিতে পারছিলাম না তখন। মনে হচ্ছিল, আমার মুখে আগুন লেগেছে। অত বিশদে যাব না, শুধু বলি, রোববার আমার মুখে যত লালা দেখেছি, এমনটা জীবনে আর কখনো দেখিনি। সত্যিই অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।’
হাতে বল লাগার আর শ্বাসনালিতে ওষুধ আটকে যাওয়া…দুটি ঘটনার পর এখন স্টোকসও আশায়, এমন আর কিছু না হোক, ‘ওটা হয়েছে (গলায় ওষুধ আটকানো) আমি হোটেলে কক্ষে ফেরার পর। তখন হিসাব করছিলাম, কী একটা দিনই না গেল! অ্যাড্রেনালিনের ধকল কমে গেছে, আমি ক্লান্ত ছিলাম। আপাতত এটাই স্বস্তি যে আমি এখানে বসে এখন পুরো গল্প বলতে পারছি। তবে আশা করি, টেস্টের আগে আমাকে ঘিরে সব নাটক এখন শেষ হয়ে গেছে।’
পাঁচ টেস্টের অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট শুরু হওয়ার কথা ৮ ডিসেম্বর ব্রিসবেনে।