দিনের খেলা শেষ! সে তো হয়ই, ম্যাচের প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে এটা এত ঘটা করে বলা কেন, তা বুঝতে একটা দৃশ্যের কথা বলতে হবে। মোহাম্মদ শামির করা দিনের শেষ বলটা ঠেকিয়েই প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটা শুরু করলেন ডিন এলগার। যেন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন!২৪০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা আজ জোহানেসবার্গে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ২ উইকেটে ১১৮ রান তুলে। জয়ের জন্য আর মাত্র ১২২ রান দরকার এলগারের দলের।
কিছু না ভেবে ম্যাচ প্রতিবেদনের এ অংশটুকু পড়ে গেলে অনেকের কাছেই এটা খুব সহজ মনে হতে পারে। কিন্তু জোহানেববার্গের পিচ আর ৪৬ রান নিয়ে উইকেটে থাকা এলগারের ইনিংসটির দিকে তাকালে এ লক্ষ্যকে আর সহজ মনে হবে না!এলগার এই রান করতে খেলেছেন ১২১টি বল। চার মেরেছেন মাত্র দুটি, অসমান বাউন্সের পিচে তাঁকে লড়াই করেই রান তুলতে হয়েছে।
কিন্তু এলগারের মধ্যে ছিল উইকেটে থাকার চোয়ালবদ্ধ পণ। এ কারণেই হয়তো দু–একবার বল হেলমেটে লাগলেও ধকল কাটিয়ে উঠে আবার ব্যাট ধরেছেন। দিনের শেষ ওভারে তো শামির একটি বল হঠাৎ লাফিয়ে উঠে তাঁর বাহুতে লাগে। কিন্তু এলগার টলেননি।
রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে কিগান পিটারসেন আউট হয়ে যাওয়ার পর সঙ্গী র্যাসি ফন ডার ডুসেনকে (৩৭ বলে ১১*) নিয়ে দিনের বাকি সময়টা পার করে দেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তাঁরা দুজনে মিলে ৭৬ বলে ২৫ রান তুলে অবিচ্ছিন্ন আছেন।সব মিলিয়ে পিচের কারণেই আগামীকাল ম্যাচের চতুর্থ দিনে রোমাঞ্চ দেখার অপেক্ষায় আছেন বিশ্বজোড়া ক্রিকেটপ্রেমীরা।
আজকের মতো আগামীকালও এলগার–ফন ডার ডুসেন জুটি মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে পারলে হয়তো রোমাঞ্চের ছিটেফোঁটাও দেখা যাবে না। কিন্তু ভারতের বোলাররা দ্রুত দু–তিনটি উইকেট তুলে নিতে পারলে আবার খেলা যাবে জমে!জোহানেসবার্গে টেস্ট ক্রিকেটের দারুণ রোমাঞ্চকর একটি দিন কেটেছে আজও।
চেতেশ্বর পূজারা (৫৩) ও অজিঙ্কা রাহানের (৫৮) দুটি অর্ধশতকে ভালো অবস্থানে চলে যাওয়া ভারতকে চাপে ফেলেন কাগিসো রাবাদা। দুর্দান্ত এক স্পেলে পূজারা–রাহানের সঙ্গে ফেরান ঋষভ পন্তকেও। ২ উইকেটে ১৫৫ থেকে হঠাৎই ভারতের স্কোর হয়ে যায় ৫ উইকেটে ১৬৭ রান।
এরপর হনুমা বিহারির লড়াইয়ের পাশাপাশি অশ্বিন (১৬) ও শার্দুল ঠাকুরের (২৮) ছোট দুটি ইনিংস আর মিস্টার এক্সট্রায় (৩৩ রান) ভর করে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হওয়ার আগে ২৬৬ রান তোলে ভারত। বিহারি শেষ পর্যন্ত ৪০ রান করে অপরাজিত থাকেন।লক্ষ্য বড় নয়, কিন্তু পিচ কঠিন; এরপরও দক্ষিণ আফ্রিকার দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রান তাড়ার শুরুটা করেন ইতিবাচকভাবে।
কিন্তু ব্যক্তিগত ৩১ রান করে দলের ৪৭ রানে মার্করাম আউট হয়ে গেলে নিজেকে একটু গুটিয়ে নেন এলগার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে পিটারসেনকে নিয়ে এলগার তোলেন আরও ৪৬ রান। থিতু হয়ে এসেও উইকেট হারানোর পর আর হাত খুলতে পারেননি এলগার।