দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাদের মাঠে এর আগে বাংলাদেশ কখনো একটা ম্যাচও জেতেনি, মাত্রই দুই মাস আগে ভারতের মতো দলকে ঘরের মাঠে যারা ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হারিয়েছে, টেস্ট সিরিজ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে; সেই একই শক্তির দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশের সামনে এভাবে ধসে পড়বে, এ যে সত্যিই বিস্ময়কর!
নির্বাচক হাবিবুল বাশারও যেন তখনো ঘোরের মধ্যে। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদের কথায়, ‘ছেলেরা বোলিং ভালো করেছে ঠিক আছে, কিন্তু এরপর আমরা ব্যাটিংটাও তো দারুণ করলাম। ১৫৪ রানের ম্যাচেও কিন্তু অনেক সময় অতিসাবধানী হতে গিয়ে বিপদে পড়তে হয়। আজ সেটা হয়নি। তামিম-লিটন ওদের বোলারদের কোনো সুযোগই দেয়নি।’
এদিকে ধারাভাষ্যকার আতহার আলী খানও বেশ উচ্ছ্বসিত। ঘুরে ঘুরে সবাইকে একটা হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা দেখাচ্ছিলেন। বার্তাটি পাঠিয়েছেন ভারতীয় কিংবদন্তী সুনীল গাভাস্কার।
কাল রাতে গাভাস্কার আতহারকে লিখেছেন, ‘অসাধারণ অর্জনের জন্য বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন, যে বাংলাদেশের ক্রিকেটটা শুরু হয়েছিল তোমাদের হাত ধরে। দলের খেলোয়াড়দেরও আমার অভিনন্দন পৌঁছে দিয়ো।’
সেঞ্চুরিয়নের আফ্রিকান প্রাইড আইরিন লজের বিশাল খাবার ঘরে ততক্ষণে চিকেন বিরিয়ানি আর ভাত-পাবদা মাছের স্বাদে ভেজানো নৈশভোজটা শেষের পথে। এক টেবিলে আড্ডায় মেতে উঠেছেন এই সিরিজেই দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড আর ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডারমট।
পাশের টেবিলে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গে স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ আর নির্বাচক হাবিবুল বাশারের গল্প। দেয়ালে ঝোলানো বড় টেলিভিশনে চলছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ ওয়ানডের ধারণ করা খেলা। আড্ডা-গল্পের ফাঁকে সবাই চোখ রাখছেন সেদিকে। তবে যেসব টেবিলে হইচইটা উঁচু, টেলিভিশনের পর্দার দিকে আগ্রহটা যেন তাদেরই বেশি!
দক্ষিণ আফ্রিকায় এসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে একটা ম্যাচ না হয় হারানো যায়। কিন্তু তিন ম্যাচের সিরিজের দুটি ম্যাচই দোর্দণ্ড প্রতাপে জিতে বাংলাদেশ সিরিজটাই ২-১–এ জিতে নেবে, এ যে রূপকথাকেও হার মানায়!
জয়ের রাতে বাংলাদেশ দলের আবহে যখন কেবলই সুখের আনাগোনা, এদিকে প্রোটিয়াদের আক্ষেপ আইপিএলের দিকে ক্রিকেটারদের মনোযোগ সরে যাওয়াতেই নাকি বাংলাদেশের বিপক্ষে এই সর্বনাশ! সুনীল গাভাস্কারের এ অভিনন্দন বার্তা নিঃসন্দেহে আরো গর্বিত করবে টাইগারদের।