স্বপ্ন দেখানোর আগে নিজে স্বপ্ন দেখেছিলেন কার্তিক। তাঁর সেই স্বপ্নেরই সওয়ারি এখন ক্রিকেটপ্রেমীরা। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কার্তিক পেরেছেন।
অবাক করছেন দীনেশ কার্তিক। অবাক করছে তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিং। অবাক করছে তাঁর বয়স। কার্তিকের ফিরে আসা নিয়ে আলোচনা করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। কার্তিকে মজে রয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
কার্তিক বদলে গিয়েছেন। নিজেকে বদলাতে পেরেছেন। ২০২২ সালের কার্তিক পিছনে ফেলে এসেছেন বহু ঘাত-প্রতিঘাত। পার করে এসেছেন জীবন, ক্রিকেটের নানা অধ্যায়। সে সবই সুখের নয়। রয়েছে আঘাত, হতাশা, বঞ্চনা, স্বপ্নভঙ্গ। নিজেকে হারিয়ে যেতে দেননি। খাদের কিনারা থেকে কার্তিক ফিরে এসেছেন সাফল্যের আলোয়। ২২ গজের ঝকঝকে দুনিয়ায়। সুনীল গাওস্করও বলেছেন, এই কার্তিককে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে দেখতে চান। তিনি বলেছেন, ‘‘কার্তিকের বয়সের দিকে আমাদের তাকানো উচিত নয়। মাঠে ও যা করছে সেটা দেখা উচিত। মেলবোর্নের বিমানে ওকে না দেখলে খুবই অবাক হব।’’
গত ১ জুন কার্তিক পূর্ণ করেছেন ৩৬ বছর। এই বয়সে এসেও চূর্ণ করেছেন সব বাধা। সম্বল ছিল অধ্যবসায়, সাধনা। পাশে ছিলেন দীপিকা পাল্লিকাল। ভারতের অন্যতম সেরা মহিলা স্কোয়াশ খেলোয়াড় কার্তিকের দ্বিতীয় স্ত্রী। ব্যক্তিগত জীবনের হতাশা দূর করে কার্তিককে মাঠে ফিরিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব কম নয় তাঁর। প্রথম স্ত্রী তথা ছোটবেলার বান্ধবী নিকিতার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে কার্তিক আরও আঁকড়ে ধরেন তাঁর প্রথম ভালবাসা ক্রিকেটকে। ২২ গজে ফেরার লড়াইয়ের পথেই তাঁর জীবনে আসে দ্বিতীয় প্রেম। সেই প্রেমের নামই দীপিকা।
প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ কার্তিক মানসিক ভাবে মানতে পারেননি। নিকিতা চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কার্তিককে ছেড়ে যান। চলে যান মুরলি বিজয়ের ঘরনি হতে। ভারতীয় দলের প্রাক্তন ওপেনার বিজয়ের সঙ্গে ছোট থেকে ক্রিকেট খেলেছেন কার্তিক। সেই বন্ধুই তাঁর ঘরে ঢুকে কখন সর্বনাশ করেছেন টের পাননি। যখন বুঝেছেন, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। কার্তিকের সন্তান বুঝতেই পারেনি ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই বদলে গিয়েছে তার বাবা! এই ধাক্কা সামলে জীবনের যুদ্ধে জিতেছেন কার্তিক।